কেন খাবেন না মিনিকেট চাল

আমরা সকলেই মিনিকেট চাল নামটির সাথে পরিচিত। আর কম বেশি এই চাল অনেকেই খায়। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা মিনিকেট চাল হিসেবে যেটা খাই আসলেই কি মিনিকেট বলতে এরূপ কোনো চাল আছে?
উত্তরটা হলো দেশে এই নামের কোনো ধান নেই। আমাদের দেশে মূলত তিন ধরনের ধান হয়। আউশ ধান, আমন ধান ও বোরো ধান। আর ধানের অর্ধেকেরও বেশি জাত হলো বোরো ধানের জাত, যেগুলোর পরিচিতি ব্রি হিসেবে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলেছেন ব্রি ধানের দুটি জাত থেকে বেশি ধান পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাজারে ব্রি নামের কোনো চাল নেই। অথচ মিনিকেট নামে কোনো ধান না থাকা সত্ত্বেও বাজারে মিনিকেট চাল রয়েছে। তাহলে আমরা মিনিকেট চাল হিসেবে যেটা খাই সেটা আসলে কি?
এমন প্রশ্ন অবশ্যই হয়তো জেগেছে আপনাদের মনে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক –
আসলে মিনিকেট নামে যে চাল গুলো বিক্রি হয় বাজারে সেই নামে কোনো ধান নেই। ভিন্ন ভিন্ন ধানের সরু চালকে বাজারে মিনিকেট নামে বিক্রি করে বিক্রেতারা। কারণ এই ধরনের চালের ধানের কোনো অস্তিত্ব নেই। এমনকি এই জাতের ধান কোথাও উৎপাদনও হয় না। মিনিকেট কোনো ধানের জাত নয় আসলে এটি একটি ব্র্যান্ড নাম।
দেশীয় ধান চালকলে আসার পর শুরু হয় ধানের প্রক্রিয়াকরণ। এই প্রক্রিয়াকরণে প্রথমে ধানের খোসা ছাড়ানো হয়। খোসা ছাড়ানোর পর এই চাল গুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্যমিকেল ও হোয়াইটনার মেশিনের মাধ্যমে চালের উপরে থাকা বাদামি আভা আলাদা করে চাল কিছুটা সরু ও সাদা করা হয়। পরবর্তীতে পলিশার মেশিনের মাধ্যমে পলিশ করে মিনিকেট চাল তৈরি করা হয়। এবং এইসকল চাল গুলোই আমরা বাজারে মিনিকেট চাল হিসেবে কিনে থাকি ।
এই চালে নেই কোনো পুষ্টিমান। মোটা চালকে মিনিকেটে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড, সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড + টুথপেস্ট + এরারুটের মিশ্রণ, সয়াবিন তেল, ফিটকারি, বরিক পাউডার ব্যবহার করা হয় । প্রতি মৌসুমে এই মিনিকেট চাল তৈরি করা হয় নিত্য নতুন কৌশল।
এই চালে কখনো পোকা ধরে না। কারণ এই চালে নেই কোনো পুষ্টি গুণাগুণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে ডিক্লারেশন দেয়া হয়েছে যে -” মিনিকেট নামে দেশে কোনো চাল বিক্রি করতে পারবে না কোনো ব্যবসায়ীরা। মিনিকেট চাল প্রতারণা বন্ধ করতে হবে “। এ কারণে অধিদফতরের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে ভোক্তাদের সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ভোক্তাদের সচেতন ও মোটা চাল খাওয়ার অভ্যাস করার কথা বলা হয়েছে।যাতে করে এইসকল মিনিকেট চাল তৈরির সুযোগ না থাকে।
Thank you for reading!