এবার আম পাবেন বারোমাস।।
সারাবছর আম পাওয়া যাবে খুব শিগগিরই। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের...

আম খেতে কে না ভালবাসে! রসে ভরা টসটসে আম দেখলে জিভে জল চলে আসে। ফলের রাজা বলে কথা। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছে আমের উন্নয়নের জন্য। সংস্থাটি পর পর ভিন্ন মাত্রার প্রজাতি যোগ করছে ফলের বাগানে। তারা গবেষণা করে আমের এমন জাত আবিষ্কার করেছে যা তিনবার ফল দেয়। এখন সারাবছর বাজারে আম পাওয়ার যাবে। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের পাহাড়তলী উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের আমের এ জাত আবিষ্কার করেছে। জাতের নাম বারি-১১। এটি বারমাসি জাতের আম। এটি সম্পূর্ণ দেশীয় আম। এটি হাইব্রিড নয়। প্রাকৃতিক ভাবে সংকরায়ন এর মাধ্যমে সৃষ্টি। একটি গাছের আমের আঁটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলে যে গাছ হয়েছে তার ফল বেছে বেছে একটি নমুনা নেওয়া হয়েছে। যেটি বছরে তিনবার ফল দেয়। মৌমাছির মাধ্যমে এ জাতের সৃষ্টি। মৌমাছি মধু সংগ্রহের জন্য যখন একটি জাতের আমের মুকুলে বসে,তার আগে অন্য জাতের মুকুল থেকেই হয়তো মধু নিয়ে উঠে আসে। তখন পরাগায়নের ফলে এ ধরনের সংকরায়ন ঘটে। বারি -১১ এভাবেই সৃষ্টি। এটিই পাহাড়তলী উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ ও পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।
বারমাসি আমের এ জাতটি এখন দেশের সব উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রেই চাষ হচ্ছে। রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ইন্সটিটিউট এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হামিম রেজাই বেশ উচ্ছাসের সাথে বিষয় টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই আমের জাতটি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। এতে সারাবছরই মানুষ আমের স্বাদ নিতে পারবেন।
বারমাসি এ প্রজাতি বছরে তিনবার ফল দেবে। দেশের যে কোন অঞ্চলের মাটিতেই এটি চাষ করা যাবে। এমনকি বাড়ির খোলা জায়গায়, বাসার ছাদে টবের মধ্যেও এটি চাষ করা যাবে। এ জাতের আম গাছ ফল দেবে ডিসেম্বর-জানুয়ারি, এপ্রিল ও জুলাই-আগস্ট মাসে। অর্থাৎ সারাবছরই আম খাওয়া যাবে, যদি কেউ এটি চাষ করেন।
বারি-১১ আমটি খেতে খুব সুস্বাদু। এটি ৫ এর মতো দেখতে এবং লম্বাটে আকারের। আম কাঁচা থাকা অবস্থায় সবুজ কিন্তু পাকার পর ত্বক হয় হলুদাভ সুবজ। লম্বায় ১১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৭ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার এবং পুরু ৭ সেন্টিমিটার। আঁটির ওজন ২৫ গ্রাম।
এক সঙ্গে পুরো টা গাছে মুকুল আসে না। একটি মুকুলের আম যখন পাকার উপযোগী তখন আরেকটিতে আমের আকার মার্বেলের মতো হয়। গাছে এক অংশের আম যখন শেষ হবে তখন অন্য অংশের আম পাকতে শুরু করবে। এভাবে সারাবছর ধরে চলতে থাকবে।
আমটির বিষয়ে ড. হামিম রেজা বলেন, ”আমরা শিগগিরই এই আমের জাতটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবো।”
Thank you for reading!