ভাপা পিঠার রেসিপি
ঋতুর বিবর্তনের সাথে সাথে চলে এলো শীতকাল আর শীতকাল মানেই হলো বিভিন্ন ধরণের পিঠার সমাহার।গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান উঠার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন শুরু হয়ে যায়। আস্তে আস্তে শীত বাড়ার সাথে সাথে পিঠার বাহারি উপস্থাপন ও আধিক্য দেখা যায়। তবে এসকল পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা সকলের কাছে অত্যধিক জনপ্রিয় একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠার নাম হলো ভাপা পিঠা।যা সাধারণত শীতকালে তৈরি করা হয় এবং আনন্দের সাথে খাওয়া হয়। এটি প্রধানত ভাপে তৈরি করা হয় তাই এর নাম ভাপা পিঠা।পিঠা মিষ্টি করার জন্য দেয়া হয় গুড় এবং স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারকেলের শাঁস দেয়া হয়।
মূলত এটি গ্রামীণ অঞ্চলের জনপ্রিয় পিঠা হলেও এটি এখন শহরে অনেক প্রচলিত হয়েছে।ভাপা পিঠা এখন সকল জায়গায় পাওয়া যায়। রাস্তাঘাটে এমনকি রেস্তোরায় ও ভাপা পিঠা পাওয়া যায়।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ভাপা পিঠা তৈরি করা যায় –
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
১।চালের গুঁড়া ১ কেজি
২।কোরানো নারিকেল ১ টি
৩।গুঁড় কুচানো ( ২৫০ গ্রাম )
৪।লবণ ( পরিমাণমত )
৫।পানি ( পরিমাণমত )
৬।সাদা পাতলা নরম কাপড়ের টুকরা
৭।ছোট্ট ঢাকনা
৮।পিঠা বানানোর জন্য ছোট গোল বাটি
৯।পিঠা ভাপানোর জন্য পাত্র বা ভাপা পিঠার মাটির হাড়ি
১০।চালনি
প্রস্তুত প্রণালী:
১।প্রথমে একটি পাত্রে চালের গুঁড়া , লবণ ও অল্প অল্প পানি দিয়ে ভালো ভাবে মাখতে হবে যেন দলা পাকিয়ে না যায় ,খেয়াল রাখতে হবে যাতে ঝরঝরে হয়।
২।এরপর চালের গুঁড়ো ভালো ভাবে চালনিতে হাত দিয়ে ঘষে ঘষে চেলে নিতে হবে যাতে করে ঝরঝরে সুজির দানার মতো হয়।
৩।পরবর্তীতে অন্য একটি পাত্রে রাখা কোরানো নারকেলের অর্ধেক চালের গুঁড়ার সাথে মাখতে হবে।
৪।এইবার হাঁড়ির অর্ধেকটা পানিতে ভরে জ্বাল দিয়ে পানি ফুটে ভাপ ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।ভাপা পিঠার জন্য বাজারে বিশেষ এক ধরনের হাড়ি পাওয়া যায় , এই হাঁড়িটির ঢাকনার ঠিক মাঝখানে একটা ফুটো থাকে । হাড়ি কিনারায় বাতাস চলাচল আটকে দেয়া হয় তাই ভাপটা ফুটো দিয়েই বের হয় ।
৫।এখন পিঠা তৈরির জন্য ছোট একটি বাটিতে এক ফোটা তেল মেখে নিতে হবে।এরপর মাখানো চালের গুঁড়া দিয়ে তার উপর গুঁড় ছিটিয়ে দিতে হবে । এবং এর উপর আবার চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে । আলতো হাতে চেপে সমান করে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশি চাপ না পরে তাহলে পিঠা সুন্দর হবে না।
৬।এরপর বাটিটা ভেজা পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে গরম পানির হাঁড়ির উপর উপুড় করে দিয়ে আস্তে করে বাটিটা সরিয়ে নিতে হবে।খেয়াল করতে হবে যেন পিঠা ভেঙ্গে না যায়।
৭।এরপর কাপড়ের প্রান্ত গুলি মুড়ে এক জায়গায় করে বড় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যেন ভাপটা পিঠার গায়ে লাগে । ৫/৭ মিনিট ভাপে সেদ্ধ হলে ঢাকনাটি সরিয়ে আঙ্গুল দিয়ে চেপে দেখতে হবে নরম হয়েছে কিনা । যদি নরম হয় তাহলে বুঝতে হবে পিঠা হয়ে গিয়েছে।
বেস তৈরি হয়ে গেল ভাপা পিঠা।চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন শীতকালে গরম গরম ভাপা পিঠা।
(Visited 12 times, 1 visits today)
Thank you for reading!