হিম শীতে কফি বানান ভিন্ন ভাবে

হিম শীতে কফির বানান ভিন্ন ভাবে আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে কফির প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না। কফি পছন্দ করে না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিদিনের ব্যস্ততম জীবনে কফি না হলে যেনো দিনটাই শুরু হতে চায় না। আর বিশেষ করে এই শীতের মৌসুমে কফি যেনো এক অমায়িক তৃপ্তির নাম।
কফির বিভিন্ন প্রকার বীজ আছে কিন্তু তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হল “ আ্যারাবিয়া”।এর স্বাদও অপেক্ষাকৃত উন্নত মানের। এর বীজ খানিকটা লম্বাটে। এরপর জনপ্রিয় কফির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “রবুস্টা”। এই বীজ গোলাকার ধরনের হয়।এক এক কফির স্বাদ এক এক রকম হয়ে থাকে। আবার কফি তৈরির ও রয়েছে বিভিন্ন ধরন। চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী সবাই ভিন্ন ধরনের কফি খেতে পছন্দ করে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিন্ন স্বাদের কিছু কফি তৈরির সম্পর্কে –
১. ব্লাক কফি :

ব্ল্যাক কফি আমরা সবাই চিনি। সাধারণত কফি বীজ গরম পানিতে দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। এটি খুব সাধারন একটি কফি। একে “ক্যাফে নয়ের “ও বলা হয় (café noir)। সাধারনত যারা মিষ্টি কম পছন্দ করে তারা ব্ল্যাক কফি বেশি পছন্দ করে। এই কফির স্বাদ খুবই কড়া হয়।
২.ক্যাপাচিনো:

অতি মিষ্টি, চকলেটে, এবং ক্রিমের প্রেমীদের কাছে ক্যাপাচিনো বেশ মানিয়ে যাবে।স্বাদের দিক দিয়ে এই কফিটি বেশ অতুলনীয়। ক্যাপাচিনো তৈরি করার জন্য এসপ্রেসো কফি সাথে দুধ এবং চকোলেট সিরাপ মিশানো হয়। স্বাদে, পরিবেশনা, এবং দেখতে এই কফি এসপ্রেসো কফি থেকে একদম আলাদা। এই কফির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর মিষ্টি স্বাদ এবং এর মিল্কফোম। এছাড়াও বিভিন্ন স্বাদের ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে ভিন্নতা আনা যায়। ক্যাপাচিনো কফির ফোমের উপরে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করে পরিবেশন করা যায়।
৩.ল্যাটে:

ল্যাটে কফি তৈরির জন্য একটি কাপে চার ভাগের একভাগ এসপ্রেসো, দুই ভাগ দুধ ও একভাগ মিল্ক ফোম নিতে হবে। এরপর এইসব উপকরণের মিশ্রনের মাধ্যমে এই কফি তৈরি করা হয়। দুধের পরিমাণ বেশি থাকায় এই কফি ক্যাপাচিনোর মত কড়া স্বাদের হয় না। ল্যাটে কফিতে চিনির পরিমান অনেক বেশি হয়। আর ক্যাপাচিনোর মতই এই ফোমের উপর বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে এই কফি পরিবেশনা করা হয়।
৪. ফ্ল্যাট হোয়াইট:

মিল্ক কফির আরেকটি নতুন রূপ হচ্ছে ফ্ল্যাট হোয়াইট কফি। দুধের ফোম ছাড়া কেবলমাত্র এসপ্রেসো ও স্টিমড দুধ দিয়ে যে কফি প্রস্তুত করা হয় তাকে ফ্ল্যাট হোয়াইট বলে। এই কফিতে কোনো প্রকার ফোম ব্যবহার করা হয় না। এই কফি প্রথম উদ্ভাবন করা হয় ১৯৮০-এর দিকে অস্ট্রেলিয়াতে। বর্তমানে এই কফি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
৫.এসপ্রেসো:

এটি চিনি এবং কফি পাউডার এর মিশ্রন যেটা উচ্চ চাপের মাধ্যমে মিশ্রিত হয়ে থাকে। এটি বেশিরভাগ অন্যান্য কফি মিশ্রনের প্রাথমিক মিশ্রনের হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ক্যাপাচিনো, ল্যাটে বানাতেও প্রথমে এসপ্রেসো বানাতে হয়। এক কাপ এসপ্রেসো কফি তৈরি করতে চাইলে সাধারনত ৩০ থেকে ৩২ মিলি লিটার এসপ্রেসো ব্যবহার করতে হয়। তবে কেউ যদি খুব বেশি কড়া স্বাদের কফি খেতে চাই, তবে ডাবল এসপ্রেসো দিয়ে তৈরি করতে পারে।
৬.অ্যামেরিকানো:

এসপ্রেসো এবং গরম পানি মিশিয়ে অ্যামেরিকানো কফি প্রস্তুত করা হয় । এটি ব্ল্যাক কফির সাথে সাদৃশ্যপূর্ন এবং এদের মধ্যে পার্থক্য হল ব্ল্যাক কফি এটির মত উচ্চ চাপে তৈরি হয় না। এর স্বাদ অনেকটাই এসপ্রেসোর মতই। সর্বপ্রথম ল্যাটিন আমেরিকায় এই কফির প্রচলন ছিল বিধায় এর নাম অ্যামেরিকানো রাখা হয়।
৭.ডালগোনা:

ডালগোনা কফি কিছুটা ঠান্ডা ল্যাটের মত। দক্ষিণ কোরিয়ার ডালগোনা ক্যানডি থেকে এই নামের উৎপত্তি হয়। সমপরিমাণ ইনস্ট্যান্ট কফি, চিনি ও পানি ভালোভাবে ফেটিয়ে কফির ফোম তৈরী করা হয় এবং ঠান্ডা দুধের ওপর তিক্ত মিষ্টি কফি দিয়ে এটি পরিবেশিত হয়। এই কফি ” কোয়ারেনটাইন কফি ” হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কারণ করোনা কালীন সময় এই কফি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি ঠান্ডাই পরিবেশিত হয়।
৮.কোল্ড কফি:

কোল্ড কফি অধিক জনপ্রিয় একটি পানীয়। এ কফি চিনে না এমন কফি প্রেমিক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কোল্ড কফি কফির জগতে এক নতুন সংযোজন। বরফকুচি আর মিল্ক ফোমের এক অনন্য স্বাদ হচ্ছে এই কোল্ড কফি। এই কফির প্রতি চুমুকে মিশে থাকে প্রশান্তি আর ঠান্ডা অনুভূতি। বিভিন্ন ধরনের কোল্ড কফি রয়েছে। যেমন -চকলেট কোল্ড কফি, ক্যারামেল কোল্ড কফি ইত্যাদি। গরমের সময় এই পানীয় সকলের অধিক পছন্দনীয়।
এভাবে বিভিন্ন ধরনের কফি তৈরি করে শীতের আমেজে মেতে উঠা যায়। ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কফি তৈরি করে কফির ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ নেওয়া যায়।
Thank you for reading!