পেঁয়াজ পাতার স্বাস্থ্য উপকারীতা

পেঁয়াজের মতোই আমরা পেঁয়াজ পাতা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। পেঁয়াজ পাতা সাধারণত পেঁয়াজের কলি হিসেবে বেশি পরিচিত। পেঁয়াজের মতো পেঁয়াজ পাতা বিভিন্ন গুণাগুণ সমৃদ্ধ। পেঁয়াজ পাতা বিভিন্ন রান্নার কাজে ব্যবহার হয়। আর শুধু রান্নার কাজে নয় চাইনিজ বা কন্টিনেন্টাল খাবারের মূল প্রয়োজনীয় উপাদান কী জানেন? ঠিক ধরেছেন তা হলো পেঁয়াজ পাতা।
পেঁয়াজ পাতা ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১২ এবং থায়ামিন সমৃদ্ধ। পেঁয়াজের কন্দে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি।এছাড়াও কপার, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ফাইবার থাকে। কোয়ারসেটিন নামক ফ্ল্যাভনয়েডের উৎস এই পেঁয়াজ পাতা। পেঁয়াজ পাতা সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।এতে উচ্চমাত্রার সালফার থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
এবার চলুন পেঁয়াজ পাতার স্বাস্থ্য উপকারীতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক —
১|উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে:পেঁয়াজ পাতার ভিটামিন-সি কোলেস্টেরল ও রক্ত চাপের উচ্চমাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
২|হৃদ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: পেঁয়াজ পাতার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলের কাজে বাঁধা প্রদান করে কোষ কলার এবং DNA এর ক্ষতি রোধ করতে পারে। পেঁয়াজ পাতার ভিটামিন সি কোলেস্টেরল ও রক্ত চাপের উচ্চ মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে যা হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়। পেঁয়াজ পাতার সালফার করোনারি হার্ট ডিজিজ এর ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
৩|শ্বাসযন্ত্রের কাজে সহায়তা করে :অ্যান্টি ভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় পেঁয়াজ পাতা সাধারণ ঠাণ্ডা, ফ্লু ও ভাইরাল ইনফেকশনের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শ্বাসযন্ত্রের কাজকে উদ্দীপিত করা ও কফ বাহির করে দিতে সাহায্য করে পেঁয়াজ পাতা।
৪|হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে: পেঁয়াজ পাতায় উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে থাকে যা হাড়ের স্বাভাবিক কার্যাবলীর জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন সি কোলাজেনের সমন্বয় সাধনে কাজ করে যা হাড়কে শক্তিশালী করে। অন্যদিকে ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব রক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করে।
৫|স্বাভাবিক দৃষ্টির রক্ষণাবেক্ষণ করে : লুটেইন ও জেনান্থিন নামক ক্যারোটিনয়েড এর উপস্থিতির জন্য পেঁয়াজ পাতা চোখের প্রতিরক্ষায় প্রভাব বিস্তার করে। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং স্বাভাবিক দৃষ্টির রক্ষণাবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন এ যা স্প্রিং অনিওন এর সবুজ অংশে থাকে।
৬|ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: সবুজ পেঁয়াজের সালফার যাতে অ্যালাইল সালফাইড থাকে তা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সবুজ পেঁয়াজে ক্যান্সার রোধী উপাদান ফ্লেভনয়েড থাকে।
৭|পাকস্থলীর জটিলতা প্রতিরোধ করে: সবুজ পেঁয়াজ গ্যাস্ট্রো ইন্টেস্টাইনাল সমস্যা প্রশমনে উপকারী ভূমিকা রাখে। ডায়রিয়া এবং পাকস্থলীর জটিলতার ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিকার হচ্ছে স্প্রিং অনিওন। অধিকন্তু রুচি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ও পেঁয়াজ পাতার উচ্চ মাত্রার ফাইবার হজম সহায়ক।
৮|ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে: পেঁয়াজ পাতার খনিজ উপাদান সালফার ছত্রাকের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে এবং ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।
এছাড়াও এরা রক্ত সংবহনের উন্নতি করে এবং শরীরে ভিটামিন বি১ এর শোষণের মাধ্যমে চাপ ও ক্লান্তি কমায়। শরীরের কলার প্রদাহ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজ পাতার ভিটামিন সি। এগুলোর পাশাপাশি পেঁয়াজ পাতায় অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি হিস্টামিন উপাদান থাকে যা আরথ্রাইটিস ও অ্যাজমার চিকিৎসায় ভালো ফল দেয়, বিপাকে সহায়তা করে, চোখের অসুখের জন্য ভালো, ত্বকের কুঞ্চন প্রতিরোধ করে ও রক্তের সুগার লেভেল কমায় সাহায্য করে।তাই স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেঁয়াজ পাতা খাওয়া প্রয়োজন ।
Thank you for reading!