গরমে কোন সবজি খাবেন!
গরমের তীব্রতা বাড়ছে সাথে করোনার আক্রমণে মানুষের রোগ-শোক ও বেড়েছে। ভ্যাপসা গরমে অনেকেই দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। এই ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বের হয়ে যায় লবণ ও পানি। তাই তো লবণ ও পানির অভাবে গরমে মাঝে-মধ্যেই শরীরে ভর করে অনাকাক্সিক্ষত ক্লান্তি ও সেইসঙ্গে মাথা ঝিমঝিমসহ দুর্বলতা। এ সময় কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, নতুবা যেকোনো সময় শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা অসুখ-বিসুখ। এ বারের গরমে নিজেদের সুস্থ রাখার জন্য খুব প্রয়োজনীয় ফল বা তাজা শাকসব্জি।
গরমের তীব্রতা বাড়ছে সাথে করোনার আক্রমণে মানুষের রোগ-শোক ও বেড়েছে। ভ্যাপসা গরমে অনেকেই দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। এই ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বের হয়ে যায় লবণ ও পানি। তাই তো লবণ ও পানির অভাবে গরমে মাঝে-মধ্যেই শরীরে ভর করে অনাকাক্সিক্ষত ক্লান্তি ও সেইসঙ্গে মাথা ঝিমঝিমসহ দুর্বলতা। এ সময় কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, নতুবা যেকোনো সময় শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা অসুখ-বিসুখ। এ বারের গরমে নিজেদের সুস্থ রাখার জন্য খুব প্রয়োজনীয় ফল বা তাজা শাকসব্জি।
তাই এই পরিস্থিততে অন্তত প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে ভুলবেন না। বাড়িতে থাকলেও প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। কারণ, প্রচণ্ড আর্দ্রতার জন্য আমাদের এখন প্রচুর পরিমাণে ঘাম হচ্ছে। তার ফলে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। শরীরকে সেই পানি ফিরিয়ে না দিতে পারলে মুশকিল। তাই অন্য কোনও কারণে ডাক্তারের বারণ না থাকলে সারা দিনে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।
রান্নাবান্নায় জিরা, ধনে, আদা, মৌরির মতো মশলাপাতির ব্যবহার আদৌ বন্ধ করবেন না। রসুন শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। তাই অবশ্যই রসুন খাবেন। এ ছাড়াও, সকালে উঠে জোয়ান ভেজানো পানি খেয়ে দিন শুরু করতে পারেন। তাতে হজমের সমস্যা এড়ানো যায়। ফলে, পেটের গন্ডগোলের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
বাজারে যেটুকু ফল বা শাক-সবজি পাওয়া যাচ্ছে, সেটুকু কাজে লাগান। রান্না করুন একেবারে হালকা করে। অতিরিক্ত তেল বা ভাজাভুজি এড়িয়ে চলুন। লাউ, টমেটো, করল্লা, ঝিঙে, পটল, কলমি শাক, পাট শাক, কাঁচা আম, শসা, লেবু পেলে অবশ্যই খান। তবে ভালো করে না ধুয়ে নিয়ে কখনওই খাবেন না শাক-সবজি। সুস্থ থাকতে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখুন সবুজ শাক সবজি। এতে পেট যেমন ঠান্ডা থাকবে। আপনিও থাকবেন তরতাজা। সঠিক ক্যালরি মেনটেন হবে। তাই গুণাগণ দেখে ডায়েটে রাখুন সবজিগুলো।
লাউ
শরীর ঠান্ডা রাখে। লাউয়ের ৯২ শতাংশ জলীয় হওয়ার দরুণ দেহে পানির প্রয়োজন মেটায়। ক্যালরির মাত্রা কম থাকায় ওজন কমাতে সহায়ক লাউ। হজমে সাহায্য করে, সঙ্গে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যাও প্রতিরোধ করে লাউ। হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে লাউ। দেহে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক লাউ। ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা ও রক্তচাপ ঠিক রাখতে সহায়ক লাউ। এতে থাকা ভিটামিন সি, বি, কে, এ, আয়রন, ফোলেট, পটাশিয়াম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন কমায়। স্ট্রেস কমাতে সহায়ক লাউ। পোস্ট ওয়ার্কআউট ড্রিঙ্ক হিসেবে লাউয়ের রস খেলে দেহে গ্লুকোজ লেভেল ঠিক থাকে।
করল্লা
আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি-এর উৎস করল্লা। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও মরশুমি সর্দি-কাশি ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। ফাইবারে ভরপুর উচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক। করল্লায় থাকা ইনসুলিন গোত্রের উপাদান পলিপেনটাইড পি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায় করল্লা। দেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখে করল্লা। ত্বক ও চুলের নানা সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি, এগজিমা, সোরিয়াসিস প্রতিরোধ ও কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ত্বককে রোদের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচায় করল্লা। লিভার ও ব্ল্যাডার সুস্থ রাখতে সহায়ক করল্লা। কম ক্যালরি, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও কমাতে সহায়ক করল্লা। ব্লাড পিউরিফাই করে শরীর ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে করল্লা।
টমেটো
দেশে প্রায় সারা বছর টমেটো পাওয়া যায়। ছোট বড় সকলের কাছেই টমেটো খুব প্রিয়। রয়েছে টমেটোর অনেক গুণাগুণ। পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। টমেটো কাঁচা ও রান্না করে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা টমেটো থেকে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। অনেকেই জানে না তাদের প্রিয় সবজি টমেটোর স্বাস্থ্য উপকারিতা ও গুণাগুণ সম্পর্কে। আপেল, নাশপাতি, আঙুর, কলা ইত্যাদি ফলের চেয়ে টমেটো অনেক কম দামী হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অন্যান্য ফলের চেয়ে চারগুণ বেশি। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, কে, লাইকোপেন, ফলিক এসিড, ক্রোমিয়াম ও গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনসমূহ। ত্বকের সুস্থতা, চেহারায় উজ্জ্বলতা প্রদানের পাশাপাশি টমেটো হার্ট ভালো রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হজমে সাহায্য করে, ব্রণ দূর করে, রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে, কিডনি সুস্থ রাখে। টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সজনে ডাটা
জ্বরে মুখে রুচি ফেরানোর জন্য সজনে ফুল উপকারী। ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে সজনে। যে কোনও ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন সারিয়ে তুলতে সহায়ক সজনে ফুল। এতে থাকা এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড যেমন আইসোলিউসিন, লিউসিন, লাইসিন ও ক্যালশিয়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সজনে ফুল ও ডাটায় থাকা ভিটামিন বি, সি, ও, কে ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সজনের ব্লাড পিউরিফায়িং প্রপার্টি ব্রণ-ফুসকুড়ি জাতীয় সমস্যা কমাতে সহায়ক। সজনতে থাকা বি কমপ্লেক্স ভিটামিন খাবার হজমে সাহায্য করে।
ঝিঙে
গরমে শরীরে জলের প্রয়োজন মেটায় ও পেট ঠান্ডা রাখে ঝিঙে। অ্যাসিডিটির সমস্যা রোধ করে। যারা স্বাস্থ্যসচেতন ও ওজন নিয়ে বিব্রত তাঁরা অনায়াসে ঝিঙে খেতে পারেন। কারণ এতে ক্যালরির মাত্রা কম। ডায়েবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী ঝিঙে। অকালপক্কতা রোধ করে ঝিঙে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে ঝিঙে। লিভার ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক ঝিঙে। এতে থাকা ক্যালশিয়াম, কপার, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
পটল
সাধারণ সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর প্রতিরোধ করে পটল। পেট ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি পটলে থাকা কম ক্যালরির মাত্রা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক পটল। যেকোনও গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় উপকারী। পটলে রয়েছে রক্ত পরিষোধক গুণ ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার গুণ। হজমে সহায়ক পটল। লিভারকেও সুস্থ রাখে। পটলে থাকা ভিটামিন এ ও সি ফ্রি র্যাডিকলস-এর সঙ্গে লড়াই করে ত্বকের বার্ধক্য রুখে দেয়। পানি কম খাওয়ার কারণে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। তাদের জন্য নিয়মিত পটল খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত।
Thank you for reading!